শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

সালামের তাৎপর্য ও ফজিলত

মো. আব্দুল ওহাব:
সালাম ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। ইসলামে সালামের বহু কল্যাণ ও ফজিলত রয়েছে। পরস্পর দেখা হলে আমরা বলে থাকি, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।’ অর্থাৎ আপনার ওপর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক। অন্যজন জবাবে বলে, ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।’ অর্থাৎ আপনার ওপরও শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। কত সুন্দর এই অভ্যর্থনা। কেউ সালাম দিলে তার জবাব উত্তমভাবে দেওয়ার জন্য স্বয়ং আল্লাহতায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যখন তোমাদের অভিবাদন করা হয় (সালাম দেওয়া হয়), তখন তোমরাও তা অপেক্ষা উত্তম অভিবাদন করো অথবা তারই অনুরূপ করো।’ সুরা নিসা, আয়াত ৮৬

সালামের প্রচলন আমাদের আদি পিতা হজরত আদম আলাইহিস সালামের থেকেই শুরু হয়েছে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা হজরত আদম (আ.)-কে তার আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। তার উচ্চতা ছিল ষাট হাত। আল্লাহতায়ালা তাকে সৃষ্টি করে বলেন, যাও, অবস্থানরত ফেরেশতাদের ওই দলটিকে সালাম দাও। আর তারা তোমার সালামের উত্তরে কী বলে তা শ্রবণ করো। তারা যে উত্তর দেবে তা তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালামের উত্তর। অতঃপর হজরত আদম (আ.) গিয়ে তাদের উদ্দেশে বললেন, আসসালামু আলাইকুম। অতঃপর ফেরেশতারা উত্তরে বলেন, ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।’ মিশকাত

পৃথিবীতে যত উত্তম কাজ আছে সেসবের মধ্যে সালাম অন্যতম। কেননা যখন সাহাবিরা হজরত রাসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চেয়েছিলেন ইসলামে সর্বোত্তম কাজ কী? তখন উত্তরের একপর্যায়ে তিনি বলেছিলেন, সালামের প্রসার করা। হাদিসে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘এক ব্যক্তি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করল, ইসলামে সর্বোত্তম কাজ কী? উত্তরে তিনি বললেন, ক্ষুধার্তকে অন্নদান করবে এবং পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে সবাইকে ব্যাপকভাবে সালাম দেবে।’ সহিহ মুসলিম

এ হাদিসের শিক্ষা অনুযায়ী আমাদের উচিত পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়া। যে ব্যক্তি আগে সালাম দেবে সে অহংকার থেকে মুক্ত বলে প্রমাণিত হবে। হাদিসে এসেছে, হজরত উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর প্রিয় বান্দা হলো ওই ব্যক্তি, যে আগে সালাম দেয়।’ মিশকাত

অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্য থেকে যে আগে সালাম দেবে, সে অহংকারমুক্ত।’ মিশকাত

অন্যের গৃহে প্রবেশের সময় সালাম দিয়ে অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা নিজেদের গৃহ ছাড়া অন্য কারও গৃহে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে ও তাদের সালাম না দিয়ে প্রবেশ করো না।’ সুরা নুর, আয়াত ২৭

অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে, তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম বলবে। এ হবে আল্লাহর কাছ থেকে কল্যাণময় ও পবিত্র অভিবাদন।’ সুরা নুর, আয়াত ৬১

এটা খুবই কার্যকর একটি কাজ। আমরা অনেক সময় ইতস্তত হয়ে পড়ি যে, কীভাবে অনুমতি নেব? কীভাবে কথা শুরু করব? অথচ ইসলাম আমাদের উত্তম পদ্ধতির কথা জানিয়ে দিয়েছে। সেটা হলো সালামের মাধ্যমে অনুমতি নেওয়া এবং সালামের মাধ্যমে কথা শুরু করা। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে প্রথমে সালাম দেবে না, তাকে প্রবেশের অনুমতি দিয়ো না।’ সহিহুল জামে

তিনি আরও বলেন, ‘যে সালামের আগে কথা বলতে শুরু করে, তার জবাব দিয়ো না।’ মুসনাদে আহমদ

সালামের উপকারিতা ও ফজিলত অনেক বেশি। কাজেই আমাদের সবার উচিত জীবনের সর্বাবস্থায় সালামের প্রসারে কাজ করা। পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়া।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION